আলাস্কায় এক অনন্য দৃশ্যপট তৈরি হয়েছিল। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন লাল কার্পেটে হাঁটলেন, করমর্দন করলেন এবং তাঁর মার্কিন সমকক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হাসি বিনিময় করলেন। বৈঠকের শেষে ট্রাম্প উচ্ছ্বসিতভাবে সম্পর্কের প্রশংসা করলেন এবং রাশিয়াকে “বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ শক্তি” বলে অভিহিত করলেন। যদিও তিনি স্বীকার করলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কোনো চুক্তি হয়নি।
তবে মস্কো সময় অনুযায়ী শনিবার সকালে এক নতুন ইঙ্গিত পাওয়া গেল। দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধবিরতিকে শান্তির পথে ধাপ হিসেবে তুলে ধরলেও ট্রাম্প হঠাৎ করে সেই পথ থেকে সরে এসে সরাসরি “শান্তি চুক্তি”-র কথা বলতে শুরু করলেন। এই অবস্থান দীর্ঘদিনের ক্রেমলিনের কৌশলের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। রাশিয়াকে যুদ্ধ চালিয়ে গেলে যে “গুরুতর পরিণতি”র হুঁশিয়ারি তিনি দিয়েছিলেন, তার কোনো বাস্তব চিত্র দেখা যায়নি। এদিকে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ সেনারা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছিল।
পুতিনের প্রত্যাবর্তন: আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা ভেঙে
২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর রাশিয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কার্যত একঘরে হয়ে পড়ে। পশ্চিমা বিশ্ব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, ন্যাটো ও ইউরোপীয় দেশগুলো কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করে ফেলে। এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এই প্রেক্ষাপটে পুতিনের যুক্তরাষ্ট্র সফর ছিল ব্যতিক্রমী। দীর্ঘ ১০ বছর পর তিনি আমেরিকার মাটিতে পা রাখলেন। ট্রাম্প তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিলেন—লাল কার্পেট, করমর্দন, এমনকি করতালি। রাশিয়ান গণমাধ্যম এই দৃশ্যকে “অসাধারণ সম্মান” হিসেবে তুলে ধরে, যা পুতিনের আন্তর্জাতিক অবস্থান পুনরুদ্ধারের বার্তা দেয়। আকাশে উড়ছিল মার্কিন যুদ্ধবিমান, আর বিশ্ব তাকিয়ে দেখছিল সেই দৃশ্য।
এটি একই সঙ্গে শক্তির প্রদর্শন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি—যেন পুতিনকে বন্ধু হিসেবেই দেখানো হলো। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ দৃশ্যকে “অত্যন্ত সম্মানজনক” বলে বর্ণনা করে এবং সম্মেলনকে পুতিনের একটি “বড় কূটনৈতিক বিজয়” হিসেবে ঘোষণা দেয়। কিন্তু এ অভ্যর্থনার সঙ্গে প্রবল বৈপরীত্য তৈরি করে জেলেনস্কির ওভাল অফিস সফর, যেখানে ট্রাম্প তাঁকে প্রায় “দুষ্ট রাষ্ট্রের প্রতিনিধি”র মতো ব্যবহার করেছিলেন। বিশ্লেষকদের মতে, এ সম্মেলনের মাধ্যমে পুতিন আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা ভেঙে আবারও বিশ্ব মঞ্চে ফিরে এলেন।
পুতিনের কৌশল ও সাফল্য
বিশ্লেষক নিল মেলভিনের মতে, পুতিন আলাস্কায় এসেছিলেন মূলত যুদ্ধ বন্ধের চাপ এড়াতে। তিনি চান যুদ্ধবিরতির আলোচনা থামিয়ে পূর্ণাঙ্গ শান্তি চুক্তি চাপিয়ে দিতে। কারণ, যুদ্ধবিরতি হলে ইউক্রেন ও তার মিত্ররা শর্ত জুড়ে দিতে পারত। মস্কোর আনুষ্ঠানিক দাবিগুলোও ইউক্রেনের জন্য অগ্রহণযোগ্য—অঞ্চল ছেড়ে দেওয়া, ক্রিমিয়ার দখল স্বীকার করা, ন্যাটোতে যোগদানের স্বপ্ন ছেড়ে দেওয়া এবং সেনাবাহিনী ছোট করা।
ট্রাম্প পরবর্তীতে সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সবার মত হলো সরাসরি শান্তি চুক্তিই যুদ্ধ শেষ করার সেরা উপায়। এটি ক্রেমলিনের কণ্ঠস্বরের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়।
ক্রেমলিনের দাবিগুলো ইউক্রেনের জন্য মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা চায়—
- ইউক্রেন চারটি অঞ্চল ছেড়ে দেবে, যেখানে রাশিয়া আংশিক দখল করে আছে।
- ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
- ন্যাটোতে যোগদানের স্বপ্ন পরিত্যাগ করবে।
- সামরিক বাহিনী ছোট করবে।
কিয়েভের কাছে এসব শর্ত কার্যত আত্মসমর্পণের সমান। তাই প্রশ্ন থেকেই যায়—ট্রাম্পের নতুন অবস্থান আসলে ইউক্রেনকে আরও বেশি চাপে ফেলবে কি না।
<img src ='https://cms.thepapyrusbd.com/public/storage/inside-article-image/ftdzoy7l7.jpg'>
নিষেধাজ্ঞার হুমকি ও অনিশ্চয়তা
আলাস্কা বৈঠকের মাত্র এক সপ্তাহ আগে ট্রাম্প সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন—যুদ্ধ না থামালে রাশিয়ার তেলের রপ্তানিতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবেন। তিনি ইতিমধ্যে ভারতের ওপর এ শুল্ক বসিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্য দেশেও তা হলে রাশিয়ার অর্থনীতি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু সম্মেলনের পর ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, এখনই সে বিষয়ে ভাবার প্রয়োজন নেই, হয়তো “দুই-তিন সপ্তাহ পরে” দেখবেন। ফলে প্রশ্ন থেকে যায়—এই হুমকি কি শুধুই রাজনৈতিক কৌশল ছিল?
ইউক্রেনের ওপর বাড়তি চাপ
সম্মেলনের পর পুতিন দাবি করলেন, ইউক্রেন নিয়ে একটি “বোঝাপড়া” তৈরি হয়েছে এবং ইউরোপকে সতর্ক করলেন যেন তারা অগ্রগতি নষ্ট না করে। অন্যদিকে ট্রাম্প বললেন, “চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো চুক্তি নেই।” তবে তিনি ইঙ্গিত দিলেন, সামনে দায়িত্ব মূলত জেলেনস্কির ওপরই পড়বে। সোমবার হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর বৈঠক হবে। সেখানে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের প্রসঙ্গ উঠলেও ক্রেমলিন তা অস্বীকার করেছে।
কার্নেগি রাশিয়া সেন্টারের তাতিয়ানা স্তানোভায়া বিশ্লেষণ করেছেন, ট্রাম্প এখন দায়িত্ব কিয়েভ ও ইউরোপের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন, যদিও নিজেকে আলোচনার কেন্দ্রে রাখছেন।
ফিওনা হিল, ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসনের সময় রাশিয়া-বিষয়ক উপদেষ্টা, বললেন—ট্রাম্প আসলে এমন এক নেতার মুখোমুখি হয়েছেন যিনি “আরও বড় গুণ্ডা।” তাঁর মতে, ট্রাম্প ইউক্রেনকে চাপ দেবেন যেন তারা পুতিনের সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য হয়, কারণ ট্রাম্প এই সংঘাত থেকে দ্রুত মুক্তি চান।
যুদ্ধ চলছেই
আলাস্কায় ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর ইউক্রেনের আকাশে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। যুদ্ধবিরতি বা শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হলেও বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন চিত্র এঁকে দেয়। গতকাল রাতে ইউক্রেনের বিভিন্ন সীমান্ত অঞ্চলে রাশিয়া ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। কিয়েভ, সুমি, দোনেৎস্ক এবং দনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলে একের পর এক বিস্ফোরণে রাত কেঁপে ওঠে। ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানায়, রাশিয়া অন্তত ৭০টিরও বেশি ড্রোন এবং একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এর মধ্যে বেশিরভাগই ছিল শাহেদ ধরনের আত্মঘাতী ড্রোন।
এবারের হামলার বিশেষত্ব হলো ন্যাটোর সরাসরি প্রতিরক্ষা সহায়তা। পোল্যান্ড ও রোমানিয়া থেকে আসা ন্যাটো সমর্থিত বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে অভিযান চালায়। গত রাতের সংঘর্ষে প্রায় ৫০টির মতো ড্রোন ভূপাতিত করা হয়, যা যুদ্ধের গতিপ্রকৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ন্যাটো প্রকাশ্যে বলেছে, এটি “প্রতিরক্ষামূলক সহযোগিতা,” তবে মস্কো একে পশ্চিমাদের সরাসরি অংশগ্রহণ হিসেবে আখ্যায়িত করছে।
<img src ='https://cms.thepapyrusbd.com/public/storage/inside-article-image/z5kgigcqk.jpg'>
বিশ্লেষকরা বলছেন, আলাস্কা সম্মেলনের পরপরই এই হামলার মাত্রা ও প্রতিরোধ যুদ্ধের “কূটনৈতিক বাস্তবতা” তুলে ধরে। সম্মেলনে ট্রাম্প ও পুতিন শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে কথা বললেও যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া আক্রমণ থামায়নি, বরং আরও জোরালো করেছে। এতে বোঝা যায়, পুতিন এখনো সামরিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার কৌশল অব্যাহত রেখেছেন।
অন্যদিকে ন্যাটোর এই নতুন ভূমিকা যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে। এতদিন পর্যন্ত পশ্চিমা দেশগুলো মূলত অস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছিল, কিন্তু সরাসরি আকাশ প্রতিরক্ষায় যুক্ত হওয়া একটি বড় পরিবর্তন। এটি রাশিয়ার জন্য স্পষ্ট বার্তা—যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয়, তবে পশ্চিমারা শুধু ইউক্রেনকেই নয়, নিজেরাও সরাসরি মাঠে নামতে প্রস্তুত। তবে ইউক্রেনের জন্য এ এক স্বস্তির খবর। কিয়েভের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, যদি ন্যাটো সমর্থিত প্রতিরক্ষা না থাকত, তবে অন্তত কয়েক ডজন ড্রোন রাজধানী এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে আঘাত হানত।
কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—আলাস্কা সম্মেলনে ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে শান্তি চুক্তির কথা বলার পরপরই রাশিয়া কেন হামলা বাড়াল? অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এটি পুতিনের একটি “চাপ সৃষ্টি কৌশল।” তিনি দেখাতে চাইছেন, আলোচনা চললেও যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াই এগিয়ে আছে। ইউক্রেনীয় সেনারা বলছে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, তবে হামলার মাত্রা প্রমাণ করছে যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ এখনো নেই। ন্যাটোর ড্রোন প্রতিরক্ষা প্রথমবারের মতো সরাসরি সংঘর্ষে যুক্ত হওয়ায় এ যুদ্ধ আর শুধু ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না—এটি ধীরে ধীরে এক বৈশ্বিক সংঘাতে রূপ নিচ্ছে।
ট্রাম্পের অবস্থান পরিবর্তন
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধবিরতির পক্ষে ছিলেন। তিনি মনে করতেন, যুদ্ধবিরতি হলে শান্তি আলোচনা সহজ হবে। ইউক্রেন ও তার মিত্ররাও এই অবস্থানকে সমর্থন করেছিল। কিন্তু আলাস্কা বৈঠকের পর তিনি হঠাৎ করেই যুদ্ধবিরতির ধারণা থেকে সরে এসে বললেন, “শান্তি চুক্তিই হলো একমাত্র সমাধান।”
এই অবস্থান ক্রেমলিনের দীর্ঘদিনের দাবির সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। রাশিয়া কখনোই সাময়িক যুদ্ধবিরতির পক্ষে ছিল না, বরং চাইছিল ইউক্রেনকে বাধ্য করা হোক স্থায়ী শান্তি চুক্তিতে, যার শর্ত নির্ধারণ করবে মস্কো।
এখন কি ঘটতে পারে?
আলাস্কার আঙ্কোরেজ সম্মেলন বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন পর্বের সূচনা করলেও রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপট আরও দুর্বোধ্য হয়ে উঠেছে। বৈঠকে শান্তি চুক্তি বনাম যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার ভিন্নতা স্পষ্ট করল, যুদ্ধক্ষেত্র আসলে কূটনৈতিক টেবিলের চেয়ে অনেক শক্তিশালী নির্ধারক।
সম্ভাব্যভাবে, রাশিয়া এখন দ্বিমুখী কৌশল অবলম্বন করতে পারে। একদিকে তারা সামরিক আক্রমণের মাত্রা ক্রমাগত বাড়িয়ে ইউক্রেনকে রণকৌশলগতভাবে ক্লান্ত করতে চাইবে; অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদেরকে আলোচনায় আগ্রহী একটি ‘যুক্তিসঙ্গত শক্তি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে। এই দ্বৈত অবস্থান তাদেরকে চাপের মুখেও শক্তির প্রাধান্য বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
ইউক্রেনের জন্য দৃশ্যপট আরও জটিল। ন্যাটো ও ইউরোপীয় মিত্রদের সমর্থন সত্ত্বেও যুদ্ধের অবসান আসন্ন নয়। বরং, পশ্চিমা সহায়তা যদি সামরিকভাবে আরও প্রত্যক্ষ আকার ধারণ করে—যেমন বিমান প্রতিরক্ষা বা গোয়েন্দা সহায়তা—তাহলে রাশিয়া এটিকে ন্যাটোর সঙ্গে সরাসরি সংঘাত হিসেবে ব্যাখ্যা করতে পারে। এতে আঞ্চলিক সংঘাত সহজেই আন্তর্জাতিক প্রক্সি-যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।
আঙ্কোরেজের পর আরেকটি অনুমান হলো—ট্রাম্প বাস্তবিকভাবে ইউক্রেনকে আরও চাপের মুখে ফেলতে পারেন। তাঁর শান্তি চুক্তি–কেন্দ্রিক অবস্থান ইউক্রেনের জন্য একধরনের রাজনৈতিক আলটিমেটাম তৈরি করবে। যদি জেলেনস্কি দীর্ঘ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান, তবে তাঁকে ক্রমশ একাকী হয়ে পড়তে হবে। অন্যদিকে, মস্কো এটিকে কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনকে আঞ্চলিক স্বীকৃতির বিনিময়ে চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করতে চাইবে।
দীর্ঘমেয়াদে, রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘাত এক নতুন “ফ্রোজেন কনফ্লিক্ট”-এ রূপ নিতে পারে। অর্থাৎ, আনুষ্ঠানিক শান্তি না হলেও যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে নিম্ন মাত্রার আক্রমণ–প্রতিআক্রমণে, যা বহু বছর ধরে গড়ে তুলবে এক অনিশ্চয়তার ভূরাজনীতি। এই অবস্থায় ইউরোপীয় নিরাপত্তা স্থায়ীভাবে অস্থির হয়ে পড়বে, আর আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী জ্বালানি ও খাদ্যসংকট সৃষ্টি করবে।
অতএব, আঙ্কোরেজ সম্মেলনের পর যুদ্ধের সমাপ্তি নয়, বরং এর নতুন রূপান্তরই সবচেয়ে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ—যেখানে কূটনৈতিক ভাষণ ও সামরিক বাস্তবতা এক দ্বন্দ্বময় সমীকরণে বন্দী থাকবে।
Comments